Is student politics really necessary in Bangladesh?
ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা ও ভবিষ্যৎ
ছাত্র রাজনীতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন পর্যন্ত ছাত্র রাজনীতির ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করা অত্যন্ত জরুরি।
শিবির ও ছাত্রদল সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তাদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তারা সাধারণ ছাত্রদের সাথে একত্রিত হয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে এবং আন্দোলনের সফলতায় ভূমিকা রেখেছে।
ছাত্রলীগ, যা অনেকের মতে পুরো রাজনীতির ক্যান্সার হিসেবে বিবেচিত, বিভিন্ন সময়ে সহিংসতা, চাঁদাবাজি, এবং সন্ত্রাসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। তাদের কার্যক্রম শিক্ষার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক দিক:
১.নেতৃত্বের বিকাশ: আজকের অনেক নামকরা রাজনীতিবিদ তাদের রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছেন ছাত্র রাজনীতি থেকে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের নেতারা ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে নিজেদের নেতৃত্বের গুণাবলী বিকশিত করেছেন।
২.প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর: ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে ভবিষ্যতে জাতির পক্ষে কোন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর খুঁজে পাওয়া যাবে না। ছাত্ররা সবসময় অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে এবং থাকবে।
৩.সামাজিক ন্যায়বিচার: ছাত্র রাজনীতি সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে ছাত্ররা সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
ছাত্র রাজনীতির চ্যালেঞ্জ:
১.অনিয়মিত ছাত্রদের প্রভাব: অনেক সময় ছাত্র রাজনীতি অনিয়মিত ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত হয়, যা শিক্ষার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
২.সহিংসতা ও সন্ত্রাস: ছাত্র রাজনীতির নামে অনেক সময় সহিংসতা ও সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে, যা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশকে বিঘ্নিত করে।
সমাধান ও সুপারিশ:
১.কঠোর অনুশাসন: ছাত্র রাজনীতি কঠোর অনুশাসনের মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হতে হবে। কোন অনিয়মিত ছাত্র সংগঠনের সদস্য বা নেতা হতে পারবে না।
২.হয়রানি ও দলীয় দাপটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ক্যাম্পাসে ছাত্রদের হয়রানি বা দলীয় দাপট দেখালে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বা পুরোপুরি প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা যেতে পারে।
৩.সিট বন্টন: হলের সিট সম্পূর্ণ প্রয়োজন, চাহিদা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপহীনভাবে বন্টন করতে হবে।
৪.অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও সন্ত্রাসী মনোভাব: অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখা এবং সন্ত্রাসী মনোভাব থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা কোন সমাধান নয়। বরং, সঠিকভাবে পরিচালিত ছাত্র রাজনীতি দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই, ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা উচিত নয়, বরং এর সঠিক দিকনির্দেশনা ও অনুশাসন নিশ্চিত করা উচিত।